আমি তো লিখতে জানি না স্যার! ED কে জানালো কেষ্ট - Ei Bangla
Ei Bangla Bangla News (বাংলা খবর) আমি তো লিখতে জানি না স্যার! ED কে জানালো কেষ্ট

আমি তো লিখতে জানি না স্যার! ED কে জানালো কেষ্ট


কৃষক পরিবারে জন্ম। অল্প বয়সেই খেটে খাওয়ার ভাবনা বপন করে নিয়েছিলেন রন্ধ্রে রন্ধ্রে। পড়াশোনা নামক ‘বিলাসিতা’ তাঁর ক্লাস এইট পর্যন্তই। তারপরই ‘অফ টু’ রোজগারের ধান্দায় খোলা বাজারে। কখনও মুদি দোকানে কাজ করেছেন, কখনও গ্রিলের দোকানে, কখনও মাছের ব্যবসা। লেখালেখির জন্য তাঁকে এই পেশায় খুব একটা বেশি পেন ধরতে হয়নি। যাও বা ধরেছেন তা কেবল বেতাজ বাদশা হওয়ার পর বিভিন্ন ব্যাঙ্কের চেকে সইসাবুত করতেই! অন্তত তাঁর ‘পাস্ট রেকর্ড’ তাই বলে। পড়াশোনার পাট চুকিয়েছেন সেই কস্মিনকালে। কিন্তু ইডি-র খপ্পরে পড়ে আবারও পেন ধরতে হয়েছে তাঁকে। শুধু তাই নয়, লিখতে হবে নিজের বয়ানও! বিশাল ফ্যাসাদে কেষ্ট! অনুব্রতকে দিয়ে বয়ান লেখাতে গিয়ে ফ্যাসাদে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাও। লিখতে পারেন না কেষ্ট! বয়ানের শেষে শুধু সইটুকু করেছেন বলে খবর ইডি সূত্রে খবর।

নিয়ম অনুযায়ী ইডি-র বয়ান রেকর্ড করে ৫০ পিএমএলএ অ্যাক্ট অনুযায়ী। এই আইনে বলা আছে, অভিযুক্তকে কিংবা সাক্ষীকে নিজেকেই নিজের বয়ান লিখে দিতে হয় অফিসারের সামনে। প্রশ্ন তদন্তকারীরা অফিসার করেন। উত্তর অভিযুক্তকে লিখতে হয়। গোটা প্রক্রিয়ার ভিডিও রেকর্ড হয়। গতকাল ইডি হেফাজতের প্রথম দিনে অনুব্রতকে বলা হয় নিজে হাতেই নিজের বয়ান লিখতে। কিন্তু ফ্যাসাদে পড়ে যান তিনি। সূত্রের খবর, এদিক-ওদিক পানে চান। শেষমেশ তাঁর নিষ্পাপ স্বীকারোক্তি, “আমি লিখতে পারি না স্যর। শুধু নাম সই করতে পারি।” এই পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়েন অফিসাররাও। ‘স্যর’রাও মুখ চাওয়াচাওয়ি করছেন। জটিল পরিস্থিতিতে আবারও জরুরি ভিত্তিতে আলোচনা।

কীভাবে জেরা হবে তা নিয়েই একটা ছোট্ট গোল টেবিল হয়ে যায় ইডি আধিকারিকদের মধ্যে। তারপর এক সিনিয়র অফিসারের নির্দেশে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (sop) মেনে একজন নিরপেক্ষ সাক্ষীকে নিয়ে আসা হয়। যিনি জেরা পর্বে অনুব্রতর দেওয়া উত্তর লিখেছেন। জেরা প্রক্রিয়ার শেষে অনুব্রত মণ্ডলকে তাঁর দেওয়া উত্তর পড়ে শোনানো হয়েছে। সব ঠিক আছে বলে জানালে সেই কাগজের নীচে সই করেন কেষ্ট।

পিএমএলএ আইন অনুযায়ী, ইডির কাছে দেওয়া বয়ান আদালতে গ্রহণযোগ্য। অর্থাৎ আদালতে বিচারকের সামনে যে জবানবন্দির সমান। আইনি ভাষায় জুডিসিয়াল স্টেটমেন্ট। ইডি অফিসারের সামনে দেওয়া সেই বয়ানকেও জবানবন্দি হিসেবেই দেখা হয়।

কোন অভিযুক্ত কিংবা সাক্ষী যাতে নিজের দেওয়া বয়ান তাঁকে দিয়ে জোর করে লেখানো বা ভয় দেখিয়ে লেখানো বলে পরবর্তীতে আদালতে দাবি করতে না পারে সেজন্যই ইডিকে এই বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া আছে আইনের মাধ্যমে। এক্ষেত্রে অনুব্রত মণ্ডল যেহেতু একজন রাজনৈতিক দলের নেতা, রাজনৈতিক কারণেই হোক কিংবা অন্য কোন কারণে, তিনি পরবর্তীতে যাতে নিজের বয়ান থেকে সরে যেতে পারেন। কিংবা তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে জোর করে বয়ান লেখানোর অভিযোগ আনতে পারেন, তাই অনুব্রত মণ্ডলের ক্ষেত্রে তাঁকে দিয়েই নিজের বয়ান লেখানোর দিকে জোর দিয়েছিল ইডি। কিন্তু তাদের জানা ছিল না, যে তিনি লিখতে পারেন না। ফলে জেরা পর্বের শুরুতেই বেশ কিছুটা সময় নষ্ট হয় এই কারণে। পরবর্তীতে নিরপেক্ষ সাক্ষী এনে তাঁকে দিয়ে কেষ্টর বয়ান লেখানো হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Post

প্রাথমিকের নিয়োগ দুর্নীতিতে নজরে এবার ২০১৬! ৪২ হাজর ৫০০ প্রার্থীর তথ্য চাইলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়প্রাথমিকের নিয়োগ দুর্নীতিতে নজরে এবার ২০১৬! ৪২ হাজর ৫০০ প্রার্থীর তথ্য চাইলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়

২০১৬ সালের প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় রিপোর্ট চাইলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বুধবার তিনি নির্দেশ দেন আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে রিপোর্ট দিতে হবে। প্রাথমিকে নিয়োগে ইন্টারভিউয়ের দায়িত্বে

নিয়োগ দুর্নীতিতে শান্তনুর স্ত্রী প্রিয়াঙ্কাকে তলব ই’ডির, স্বামীর গ্রেপ্তারির পরেই বেপাত্তা স্ত্রীনিয়োগ দুর্নীতিতে শান্তনুর স্ত্রী প্রিয়াঙ্কাকে তলব ই’ডির, স্বামীর গ্রেপ্তারির পরেই বেপাত্তা স্ত্রী

নিয়োগ দুর্নীতিতে এবার শান্তনুর স্ত্রী প্রিয়াঙ্কাকে তলব করল ইডি। চলতি সপ্তাহেই তাঁকে তলব করেছে ইডি। কারণ, তাঁর নামে রয়েছে প্রচুর সম্পত্তি। কিন্তু স্বামীর গ্রেপ্তারির পর থেকেই বেপাত্তা প্রিয়াঙ্কা। কোথায় তিনি? কীভাবে

লক্ষাধিক টাকার মাদক সহ গ্রেফতার ১, বড় সাফল্য মালদহের ইংরেজবাজার থানারলক্ষাধিক টাকার মাদক সহ গ্রেফতার ১, বড় সাফল্য মালদহের ইংরেজবাজার থানার

মালদাঃ মাদক উদ্ধারে বড় সাফল্য ইমেজ বাজার থানার পুলিশের। গোপন সূত্রে অভিযান চালিয়ে লক্ষাধিক টাকার ব্রাউন সুগার সহ এক মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করলো পুলিশ। রবিবার গভীর রাতে কালিয়াচক থানার সীমান্ত সংলগ্ন 

পাড়ায় পাড়ায় গ্রীন ভলেন্টিয়ার! কারা এরা?পাড়ায় পাড়ায় গ্রীন ভলেন্টিয়ার! কারা এরা?

চোখ রাঙ্গাচ্ছে অ্যাডিনো ভাইরাস। এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই নানান নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। তবে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুরা।