মধ্যপ্রদেশের ২০ টাকার চিকিৎসক পেলেন পদ্মশ্রী সম্মান। মাত্র ২০ টাকার ফি-তে রোগী দেখে থাকেন চিকিৎসক মুনিশ্বর দাওয়ার। অন্য দশটা চিকিৎসকের থেকে তিনি অনেক আলাদা। মুর্মুষ রোগীর চিকিৎসাই তাঁর একমাত্র ব্রত। দুর্মূল্যের বাজারে রোগী দেখার ফি, মাত্র ২০ টাকা। তাও অনেক সময় দেওয়ার মতো ক্ষমতা থাকে না রোগীদের তাতেও কোনও বিরক্তি নেই চিকিৎসকের। রোগীদের মধ্যে কেউ কেউ তাঁকে বসিয়েছে ভগবানের আসনে। মধ্যপ্রদেশের ২০ টাকা ফি নেওয়া চিকিৎসককে এ বছর পদ্ম সম্মানে সম্মানিত করল কেন্দ্রীয় সরকার। মুনিশ্বর চন্দর দাওয়ার নামে ৭৭ বছর বয়সী চিকিৎসক প্রতিদিন প্রায় ২০০-র বেশি রোগী দেখেন। রোগী দেখার জন্য আগে ২ টাকা ফি নিতেন তিনি। কিন্তু পরে সেই ফি ২০ টাকা করেন তিনি। ফি কম নেওয়ার কারণ নিয়ে সংবাদসংস্থাকে কাছে মুখ খুলেছেন মধ্যপ্রদেশের ওই চিকিৎসক।
আরো পড়ুন- হাতেখড়ি সেরেই দিল্লি তলব রাজ্যপালকে, ধনখড় আনন্দ বৈঠকে নিয়ে জল্পনা
এ নিয়ে সংসারে মধ্যে কোনও বিতর্ক ছিলনা বলে দাবি করেন তিনি। চিকিৎসাকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়াকেই তাঁর প্রধান লক্ষ্য ছিল বলে জানিয়েছেন। বর্তমানে ৭৭ বছর বয়সেই কোনও ক্লান্তি নেই মুনিশ্বরের। সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত দেখে যাচ্ছেন রোগী। কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত করাই উচ্ছ্বসিত ২০ টাকার চিকিৎসক। আর এই সাফল্যের রসায়ন কি, তা নিয়েও মুখ খুলেছেন তিনি।
তাঁর মতে, ধৈর্য ধরে কাজ করলে সাফল্য আসবেই। পদ্ম সম্মান পাওয়াটা মানুষের আশীর্বাদ বলে মনে করছেন দাওয়ার। ১৯৪৬ সালের ১৬ জানুয়ারি বর্তমান পাক অধিকৃত পঞ্জাবে জন্মগ্রহণ করেন মুনিশ্বর চন্দর দাওয়ার। দেশভাগের পর তাঁর পরিবারের সদস্যরা পাকাপাকিভাবে ভারতে চলে আসেন। ১৯৬৭ সালে জব্বলপুর থেকে এমবিবিএস হন। ১৯৭১ সালে ভারত-পাক যুদ্ধের সময় ভারতীয় সেনাবাহিনীতে চিকিৎসক হিসেবে যুক্ত ছিলেন। ১৯৭২ সাল থেকে জব্বলপুরে মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন এই প্রবীণ চিকিৎসক।
বয়স হলেও এখনই রোগী দেখা থেকে ছুটি নিতে চাননা চিকিৎসক দাওয়ার। যতদিন বাঁচবেন, শক্তি থাকলে মানব সেবায় নিজেকে যুক্ত রাখবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
শুধু দাওয়ার নন, নূন্যতম ফি-তে রোগী দেখে পদ্ম সম্মান পেয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের বাসিন্দা সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায়। মাত্র ১ টাকার বিনিময়ে রোগী দেখতেন তিনি। দূর-দূরান্ত থেকে রোগীরা ছুটে আসতেন তাঁর কাছে। বহু মানুষ পাকাপাকিভাবে রোগ থেকে নিস্তার পেয়েছিলেন তাঁর চিকিৎসায়। গরীবের ভগবান হয়ে উঠতে পেরেছিলেন তিনি। এই বিশেষ অবদানের জন্য ২০২১ সালে সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায়কে পদ্মশ্রী খেতাব দিয়ে সম্মানিত করেছিল কেন্দ্র।