ভারতে নৌ শক্তির গুরুত্ব প্রথম উপলব্ধি করেছিল মৌর্যরা , তাঁদের একটি ছোটোখাটো নৌ-বাহিনিও ছিল । কিন্তু নৌ অভিযানের মাধ্যমে সাম্রাজ্যবিস্তারের পথপ্রদর্শক ছিলেন চোল সাম্রাজ্যের দুই নৃপতি — প্রথম রাজরাজ চোল এবং প্রথম রাজেন্দ্র চোল । চোলরাই প্রথম সামরিক নৌ অভিযান ব্যাপকভাবে শুরু করে এবং ভারতের ইতিহাসে সর্বকালের সর্ববৃহৎ সামুদ্রিক সাম্রাজ্য গঠন করে । পানিকরের ভাষায় “The Only Indian State Which had a proper appreciation of sea power was the Chola Empire” ।
আরো পড়ুন- জানতেন না বাংলা, জিতেন্দ্র থেকে জিৎ কিভাবে বাংলা সিনেমার সুপারস্টার হলেন? রইল সেই গল্প
কেরল , সিংহল ও পান্ড্য রাজারা পশ্চিম ভারতের ব্যাবসা-বাণিজ্য একসাথে নিয়ন্ত্রণ করতেন । #রাজরাজ_চোল এই নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নেওয়ার জন্য একটি শক্তিশালী নৌবাহিনী গঠন করেন । চের নৌশক্তির ধ্বংসসাধন ছিল রাজরাজের নৌবাহিনীর প্রথম সাফল্য । পশ্চিমভারতের বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণে আনার পর রাজরাজের নজর পড়ল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাণিজ্যে আরব নিয়ন্ত্রণের উপর । বাণিজ্য পথের নিয়ন্ত্রণ আরবদের থেকে ছিনিয়ে নিতে তিনি আরবদের ঘাঁটি মালদ্বীপ দখল করে নেন । যদিও আরবদের প্রভাব একেবারে ধ্বংস করতে না পারলেও অনেকাংশে খর্ব করেন । এরপর শ্রীলঙ্কার উত্তরভাগ দখল করে নেন ।
রাজরাজ চোল যে বিস্তারের সূচনা করেছিলেন , তা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছোয় তাঁর পুত্র #রাজেন্দ্র_চোল -এর আমলে । রাজেন্দ্র নৌবাহিনীর আরো বৃদ্ধি ঘটান এবং পেন্ড ও আন্দামান দখলের মাধ্যমে নিজের বিজয় অভিযান শুরু করেন । এরপর তাঁর চোখ পড়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় , সুমাত্রায় তখন শৈলেন্দ্র বংশীয় রাজাদের ব্যাপক দাপট । রাজেন্দ্র চোল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সেই কঠিনতম প্রতিপক্ষ শৈলেন্দ্র বংশীয় বিজয়তুঙ্গবর্মনকে পরাজিত এবং বন্দি করেন । ফলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এক বিরাট অংশে চোলদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয় । সমুদ্রে এত বড় বিজয় চোলদের আগে ও পরে কোনো নৃপতি লাভ করতে পারেন নি । চোলদের দৌরাত্ম্যে বঙ্গোপসাগর ‘চোল হ্রদ’ এ পরিণত হয় এবং এই বাণিজ্য পথের প্রায় সম্পূর্ণ বাণিজ্য চোলরাই নিয়ন্ত্রণ করতে থাকে ।
তথ্যসূত্রঃ
📌A Comprehensive History of India — R.S Sharma
📌 Naval warfare in Ancient India — Dr Avantika Lal
📌 ভারতের ইতিহাস — অতুল চন্দ্র রায়
📌 প্রাচীন ভারতের ইতিহাস — সুনীল চট্টোপাধ্যায়
প্রাপ্তি স্থান:- India:ভারতবর্ষ