লাল কাঁকড়ার জন্য ভিআইপি রাস্তা, যেখানে মানুষের চলাচল নিষিদ্ধ - Ei Bangla
Ei Bangla ব্লগ লাল কাঁকড়ার জন্য ভিআইপি রাস্তা, যেখানে মানুষের চলাচল নিষিদ্ধ

লাল কাঁকড়ার জন্য ভিআইপি রাস্তা, যেখানে মানুষের চলাচল নিষিদ্ধ


৫ কোটি লাল কাঁকড়ার জন্য ভিআইপি রাস্তা, সেখানে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে নোটিশ বোর্ড। এই রাস্তায় আর মানুষ যেতে পারবে না। যান চলাচল একেবারেই নিষিদ্ধ। এমনকি মানুষের বাইরে বেরোনোর সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সেই অনুযায়ী পরিবর্তন করা হয়েছে অফিস টাইম। ভাবছেন সামান্য কাঁকড়ার জন্য এত কিছু? হ্যাঁ এটাই সত্যি। পৃথিবীর এই জায়গায় মানুষ প্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার চেষ্টা করে। বছরের অন্যান্য দিনে যে রাস্তা দিয়ে মানুষ অত্যন্ত ব্যস্ত ভাবে গাড়ি চালিয়ে যান কিংবা হেঁটে যান সেই রাস্তা কয়েক মাসের জন্য বন্ধ থাকে। সেই রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করে শুধু লাল কাঁকড়ার দল। দেখলে মনে হবে বৃষ্টি ভেজা পথে কেউ যেন প্রকৃতির লাল গালিচা বিছিয়ে দিয়েছে। অক্টোবর-নভেম্বর মাসে লাল চাদরে মুড়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার এই জায়গা।

ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে ক্রিসমাস দ্বীপ। অস্ট্রেলিয়ার অধীনে থাকা দ্বীপটির আয়তন ১৩৫ বর্গ কিলোমিটার। সেই দ্বীপের সৈকতের হলুদ বালি আর পাশের পিচ ঢালা রাস্তার রংও এখন লাল। কারণ সেখানে ভিড় করেছে কোটি কোটি কাঁকড়া। ভারত মহাসাগরের নীল জল এখন হয়ে গিয়েছে লাল!

<img src=”https://banglahunt.in/wp-content/uploads/2022/12/img_1_1671484260567_copy_1024x1365-225×300.jpg” alt=”” width=”225″ height=”300″ class=”alignnone size-medium wp-image-11851″ />

ক্রিসমাস দ্বীপে হাজার দু’য়েক মানুষের পাশাপাশি সেখানে রয়েছে প্রায় ৫ কোটি কোটি লাল কাঁকড়া। তাদের জন্য দ্বীপের এক বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল- ‘ক্রিসমাস আইল্যান্ড ন্যাশনাল পার্ক’ সংরক্ষিত রয়েছে।

ভারত মহাসাগরের ঐ দ্বীপে বর্ষার মৌসুম সাধারণত আসে অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে। আর সেই সময় থেকই উপকূলের জঙ্গলে গর্ত খুঁড়ে ডেরা বেঁধে থাকা লাল কাঁকড়ার দল সমুদ্রে পাড়ি দেয়! কারণ, এটি তাদের প্রজননের সময়। কাঁকড়াদের এ বার্ষিক পরিযান দেখতে সে সময় ক্রিসমাস দ্বীপে ভিড় জমান দেশ-বিদেশের পর্যটক আর প্রাণিবিজ্ঞানীরা।

সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে নির্দিষ্ট কিছু পথ ধরে সমুদ্রের তীরে পৌঁছায় কাঁকড়ার দল। তাৎপর্যপূর্ণভাবে প্রথম সারিতে থাকে পুরুষ কাঁকড়ারা। তারা গিয়ে সৈকতের বালি খুঁড়ে তৈরি করে বাসা। ততক্ষণে পৌঁছে যায় স্ত্রী কাঁকড়ারাও। প্রজননের পরে পুরুষ কাঁকড়ারা ফের জঙ্গলে ফিরে যায়। স্ত্রীরা থেকে যায় আরো কিছুদিন। সমুদ্রের অগভীর জলে ডিম পাড়ার পরে তাদের ছুটি।

তিন-চার সপ্তাহ পরে সেই ডিম ফুটে বের হয়ে ছানা কাঁকড়ারা। এরপর দল বেঁধে জঙ্গলে ফিরতে শুরু করে তারা। সবাই অবশ্য ফিরতে পারে না। পাখি বা সাপেদের খাদ্যে পরিণত হয়। যারা ফেরে তারা গর্ত খুঁড়ে জঙ্গলে বানাতে হয় ডেরা। এরপর শুরু হয় তিন বছরের প্রতীক্ষা। পরিণত হওয়ার পরে আবার এক অক্টোবরের শেষে সঙ্গী বা সঙ্গিনীর খোঁজে সাগরপারে পাড়ি দেয় কাঁকড়ার দল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Post

গৌড়ের প্রথম ধারাবাহিক শাসক-বংশগৌড়ের প্রথম ধারাবাহিক শাসক-বংশ

রানা চক্রবর্তীঃ হানাহানি ও রক্তপাতের সুদীর্ঘ পথ অতিক্রম করে গৌড়-বঙ্গ কিভাবে প্রথম নিজের ধারাবাহিক শাসক-বংশ পেয়েছিল, সেই প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে ইতিহাসের পথে অনেকটা পিছনের দিকে হাঁটতে হবে। বখতিয়ার খিলজির

সরস্বতী পুজোর দিন বই ছোঁয়া মানা, তাহলে পুজোর দিন কেন হয় হাতেখড়ি? শাস্ত্র মতে এর ব্যাখ্যা কিসরস্বতী পুজোর দিন বই ছোঁয়া মানা, তাহলে পুজোর দিন কেন হয় হাতেখড়ি? শাস্ত্র মতে এর ব্যাখ্যা কি

তাঁকে তপস্যায় তুষ্ট করে বেদজ্ঞ হয়েছিলেন দস্যু রত্নাকর। তাঁর বাৎসল্যেই মহাকবি হয়েছিলেন মূর্খ কালিদাস। এহেন দয়া যাঁর শরীরে তিনি আর যাই করুন কারও ক্ষতি যে করবেন না একথা বলার অপেক্ষা

চীন, ভারতবর্ষ রাশিয়ার সাথে নিজেদের মুদ্রাতে ব্যবসা করছে, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নাকী পূর্ব বনাম পশ্চিম! কোন পথে বিশ্ব রাজনীতি?চীন, ভারতবর্ষ রাশিয়ার সাথে নিজেদের মুদ্রাতে ব্যবসা করছে, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নাকী পূর্ব বনাম পশ্চিম! কোন পথে বিশ্ব রাজনীতি?

১৫৫৫ সালে অর্থাৎ প্রায় চারশো বছর আগে ফ্রান্সের বিখ্যাত জ্যোতিষী নস্ত্রাদ্রামুস এমন কিছু ভবিষ্যত বানী করেছিলেন যা আজও মানুষকে অবাক করে দেয়। ওনার প্রায় অধিকাংশ ভবিষ্যত বানীই সত্য হয়েছিল যার

ভারতবর্ষের জেমস বণ্ড! পাকিস্তানের পরমানু প্রজেক্ট ধ্বংস করতে কি করছিলেন অজিত দোভাল?ভারতবর্ষের জেমস বণ্ড! পাকিস্তানের পরমানু প্রজেক্ট ধ্বংস করতে কি করছিলেন অজিত দোভাল?

ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মিঃ অজিত দোভাল। একটা মানুষের যোগ্যতা কতটা থাকলে ৭৯ বছর বয়সেও দেশের এমন গুরুত্বপূর্ন পদের দায়িত্ব দেওয়া যায় তা সহজেই অনুমেয়। অজিত দোভাল তাঁর সারা জীবনে