আধুনিক যুদ্ধের নিঃশব্দ স্বয়ংক্রিয় মৃত্যুদূত গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র - Ei Bangla
Ei Bangla ব্লগ আধুনিক যুদ্ধের নিঃশব্দ স্বয়ংক্রিয় মৃত্যুদূত গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র

আধুনিক যুদ্ধের নিঃশব্দ স্বয়ংক্রিয় মৃত্যুদূত গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র


মহাভারতের রয়েছে নারায়ণাস্ত্র, পাশুপাত অস্ত্র, ব্রহ্মদণ্ড অস্ত্র সহ এমনসব একাধিক অস্ত্রের বিবরণ যাদের সাথে হুবুহু মিল রয়েছে বর্তমান যুগের স্যাটেলাইট দ্বারা নিয়ন্ত্রিত আর পরিচালিত গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রের। মহাভারতের বিবরণ অনুসারে মানবজাতির আদি পূর্বপুরুষ ভিনগ্রহী যোদ্ধাদের দ্বারা ব্যবহৃত ওইসব অস্ত্রগুলি স্বয়ংক্রিয়ভাবে শত্রুদের চিহ্নিত করে তাদের দিকে নির্ভুল লক্ষ্যে বিদ্যুৎ বেগে ধেয়ে এসে এক দক্ষ শল্যচিকিৎসকের দ্বারা ব্যবহৃত ছুরিকার ন্যায় মুহূর্তের মধ্যে তাঁদের সুনিপুণভাবে ধ্বংস করে দিতো। বর্তমান যুগের স্যাটেলাইট দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্রগুলির ওয়ারহেডে সংরক্ষিত থাকে শক্তিশালী বোমা। ক্ষেপণাস্ত্রগুলি নিক্ষিপ্ত হবার পর মহাভারতের অস্ত্রের ন্যায় সেগুলিও তাঁদের শত্রুপক্ষকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চিহ্নিত করে নির্ভুল লক্ষ্যে ধেয়ে এসে সুনিপুণভাবে ধ্বংস করে দেয় শত্রুদের। বর্তমান যুদ্ধে দুই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র দেখা যায়। প্রথমটি আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আর দ্বিতীয়টি কৃত্রিম উপগ্রহ দ্বারা পরিচালিত গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র।

আমেরিকার LGM বা রাশিয়ার RS আর RT বা চিনের ডংফেং বা ভারতের অগ্নি সিরিজের দূরপাল্লার পরমানু অস্ত্র সংবাহক আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলি (ICBM) একবার নিক্ষেপণের পর মহাকাশে উড্ডীন হয়ে ধনুকের ন্যায় পূর্বনির্ধারিত একটি বক্র গতিপথ (Arcing Trajectory) অনুসরন করে শত্রু শিবিরের দিকে ধেয়ে গিয়ে আছড়ে পড়ে আঘাত হানে। ওই সময় শত্রুপক্ষ তাঁদের স্থান পরিবর্তন করলেও আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলি আর তাদের গতিপথ পরিবর্তন করতে পারবে না। এছাড়া ICBM ক্ষেপণাস্ত্র গুলি Mass Destruction অর্থাৎ একঘায়ে ব্যপক গণবিধ্বংসী তাণ্ডবলীলা চালায়। কিন্তু কোন এক বিশেষ লক্ষ্যবস্তুকে দক্ষ শিকারির ন্যায় নিঃশব্দে ধ্বংস করতে অক্ষম। অর্থাৎ ICBM গুলির কার্যক্ষমতা অনেকটা মহাভারতের ব্রহ্মাণ্ড অস্ত্র আর ব্রহ্মশীর্ষ অস্ত্রের মতো। অপরদিকে শত্রুপক্ষকে প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করে টার্গেট লক একবার নিক্ষেপণ করার পরেও কৃত্রিম উপগ্রহ দ্বারা পরিচালিত গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রগুলির গতিপথ প্রয়োজনে পরেও পরিবর্তন করা সম্ভব। এছাড়া উপগ্রহের সাহায্যে কম্যান্ড সিস্টেম থেকে শত্রুপক্ষের উপর নিরন্তর নজরদারি চালিয়ে গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে এক দক্ষ শিকারির ন্যায় নিঃশব্দে কোন এক বিশেষ লক্ষ্যবস্তুকে নিকেশ করা সম্ভব। শত্রুপক্ষ তাঁদের স্থান পরিবর্তন করলে গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রগুলিও স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাদের যাত্রাপথ পরিবর্তন করে এবং অবশেষে নির্ভুল লক্ষ্যে সাক্ষাৎ যমদূতের ন্যায় শত্রুপক্ষের উপর আছড়ে পড়ে তাঁদের সুনিপুণভাবে ধ্বংস করে। ঠিক যেমন মহাভারতের আমলে করতো নারায়ণাস্ত্র, পাশুপাত অস্ত্র, ব্রহ্মদণ্ড অস্ত্র সহ অনান্য অস্ত্রগুলি। আধুনিক যুগের মানব বিজ্ঞানী আর প্রযুক্তিবিদরা কিভাবে তৈরি করতে সফল হলেন এইরকম অভূতপূর্ব গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র ? সবার প্রথম সেমি গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছিল কারা ? আসুন বিস্তারিত ভাবে জেনে নেই গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রের ইতিহাস আর প্রযুক্তি।

আরো পড়ুন- ব্ল্যাক হোলের অজানা রহস্য – প্রথম পর্ব

আধুনিক মানব সভ্যতার ইতিহাসে অ্যাডলফ হিটলারের নাৎসি বাহিনীর দ্বারা নির্মিত V2 রকেটই ছিল দুনিয়ার প্রথম সামরিক কৌশলযুক্ত (Tactical) দূরপাল্লার গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র। নাৎসি বাহিনীর V সিরিজের অত্যাধুনিক অস্ত্র নির্মাণ প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত এই V2 ক্ষেপণাস্ত্র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটেন সহ ইউরোপের অনান্য দেশগুলির মাটিতে লাগাতার আছড়ে পড়ে মিত্র বাহিনীর রাতের ঘুম কেড়ে নিতে সফল হয়েছিল। যদিও নাৎসি বাহিনীর V2 ক্ষেপণাস্ত্রগুলি মিত্র বাহিনীর সামরিক ঘাঁটি সহ গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলিতে প্রায় নির্ভুল লক্ষ্যে আঘাত হেনে একসাথে অনেকগুলি লক্ষ্যবস্তুকে ধ্বংস করে মিত্র শিবিরে ব্যপক তাণ্ডবলীলার সৃষ্টি করেছিল কিন্তু সেইসব ক্ষেপণাস্ত্রগুলি কোন বিশেষ একজন শত্রু বা কোন বিশেষ একটি লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুল লক্ষ্যে আঘাত হেনে সেই শত্রু বা লক্ষ্যবস্তুকে ধ্বংস করতে অপারগ ছিল। এর কারন তৎকালীন সময়ের V2 ক্ষেপণাস্ত্রগুলির স্বয়ংক্রিয় গাইডেড পরিচালন ব্যবস্থা ততটা উন্নতমানের ছিল না। অর্থাৎ এককথায় V2 ক্ষেপণাস্ত্রগুলি ছিল কিছুটা আজকের যুগের ICBM ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলির মতো। সমগ্র শত্রুশিবির গুঁড়িয়ে দিয়ে অযথা বিশ্বের দরবারে শোরগোল না ফেলে নিঃশব্দে শত্রু শিবিরে আরও নির্ভুল ও যথাযথ ভাবে আঘাত হেনে শত্রুপক্ষের কোন এক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা লক্ষ্যবস্তুকে নিকেশ বা ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে সমর বিজ্ঞানী আর প্রযুক্তিবিদদের নিরন্তর গবেষণা আর প্রয়াসের ফলেই আবিষ্কার হয় আজকের কৃত্রিম উপগ্রহ দ্বারা পরিচালিত অত্যাধুনিক গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র। আধুনিক যুদ্ধের ইতিহাসে মানব বিহীন শিকারি ড্রোন থেকে এই গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেই ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে নিঃশব্দে নির্ভুল লক্ষে আঘাত হেনে ইরাকের মাটিতে আমেরিকা নিকেশ করেছে ইরানের কট্টরপন্থী জিহাদি সেনাপ্রধান কাশেম সুলেমানিকে। আবার এই বছরেরই জুলাই মাসে আরেকটি ড্রোন থেকে বিস্ফোরক হীন তরবারির ন্যায় সুতীক্ষ্ণ ব্লেড যুক্ত গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র হেলফায়ার নিক্ষেপ করে মার্কিন বাহিনী নিঃশব্দে নিকেশ করেছে আল কায়দায় সর্বোচ্চ জিহাদি নেতা আয়মান আল জুয়াহরিকে। বলাই বাহুল্য গাইডেড হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্রের এই সংস্করণের সাথে অভূতপূর্ব সাদৃশ্য রয়েছে মহাভারতে বর্ণিত শ্রীকৃষ্ণের গাইডেড সুদর্শন চক্রের সাথে।

বর্তমানে আধুনিক যুগের গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রগুলিতে বিস্ফোরক যুক্ত বোমা ছাড়াও সুদর্শন চক্রের ন্যায় ধারালো ব্লেড, জৈবিক কীটাণুযুক্ত ভাইরাস সহ নানাবিধ মারণাস্ত্র সংযুক্ত করা যায়। বর্তমান কালের অত্যাধুনিক গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রগুলি সর্বোচ্চ ৯,৬৬০ কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত নির্ভুল লক্ষ্যে শত্রুদের নিকেশ করতে সক্ষম। এছাড়া আজকের যুগের এইসব গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রগুলি পরমানু বোমা বহনেও সক্ষম। এইসব কারনে অগ্নি ৫ এর মতো আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলি পরিবর্তে কৃত্রিম উপগ্রহ দ্বারা পরিচালিত গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রগুলি আমেরিকা, রাশিয়া, চিন, ইজরায়েল, ভারত সহ বিশ্বের অনান্য শক্তিধর রাষ্ট্রগুলিতে দ্রুতবেগে জনপ্রিয় হচ্ছে। কিন্তু ঠিক কিভাবে নির্ভুল লক্ষ্যে শত্রুদের নিকেশ করতে সফল হয় এই গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র ?

প্রত্যেকটি গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র মোট চারটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান দ্বারা নির্মিত হয়। সেগুলি হলো যথাক্রমে তাদের ইঞ্জিন, ওয়ারহেড, ফ্লাইট কন্ট্রোল সিস্টেম আর গাইডেন্স সিস্টেম অর্থাৎ পরিচালন ব্যবস্থা। অনেকটা মহাকাশযান গুলোর মতোই গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রের ইঞ্জিন সেই ক্ষেপণাস্ত্রটিকে তার লঞ্চার থেকে আকাশে উড্ডীন হয়ে লক্ষ্যবস্তুর দিকে ধাবিত হতে পরিচালনা করে। লঞ্চার বা উৎক্ষেপণ স্থল হলো সেই প্ল্যাটফর্ম যেখানে যার ইন্ধন শক্তির সাহায্যে যে কোন ক্ষেপণাস্ত্রকে উৎক্ষেপণ করা হয়। নাসা বা ইসরোর মহাকাশযান উৎক্ষেপণও লঞ্চার প্ল্যাটফর্মের সাহায্যেই করা হয়। কিন্তু ক্ষেপণাস্ত্রের লঞ্চার অনেক ছোট আকারের হয়। রামায়ন আর মহাভারতের আমলে ধনুক ছিল মানবজাতির আদি পূর্বপুরুষ ভিনগ্রহীদের ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চারের রূপক উৎক্ষেপণ স্থল।

যে কোন আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্রের ওয়ারহেডে সংরক্ষিত থাকে বিস্ফোরক যুক্ত বোমা বা ভাইরাস যুক্ত জীবাণু অথবা ধারালো ব্লেড। এরপর ক্ষেপণাস্ত্রের ফ্লাইট কন্ট্রোল সিস্টেম ক্ষেপণাস্ত্রটিকে আকাশে তার উড়ানপথ সঠিকভাবে বজায় রেখে লক্ষ্যবস্তুর দিকে ধাবিত হতে পরিচালনা করে। গাইডেন্স সিস্টেমের কাজ হলো ক্ষেপণাস্ত্রের যাত্রাপথে শত্রুশিবিরের নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুর উপর নিরন্তর নজরদারি চালিয়ে ক্ষেপণাস্ত্রটিকে সঠিক পথে বা লক্ষ্যে পরিচালিত করা। নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে যে এই গাইডেন্স সিস্টেমই হচ্ছে যে কোন নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর জটিল অঙ্গ। কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে সংগৃহীত তথ্যের সাহায্যে শত্রু শিবিরের নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুর উপর নিরন্তর নজরদারি চালিয়ে লক্ষ্যবস্তুর সর্বশেষ সঠিক স্থান নির্ণয় করে সেই স্থানে পৌঁছনোর জন্য সঠিক আর নির্ভুল দিকে ক্ষেপণাস্ত্রটিকে নিরলস ভাবে পরিচালিত করাই হচ্ছে গাইডেন্স সিস্টেমের একমাত্র কাজ।

যে কোন গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রর পরিচালনা ব্যবস্থা মূলত পাঁচটি মৌলিক ব্যবস্থার উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। সেগুলি হলো যথাক্রমে
১) কম্যান্ড অর্থাৎ চালনা করা
২) ইনার্শিয়াল (পদার্থ বিজ্ঞানের Inertia থেকে এই শব্দের উৎপত্তি)
৩) অ্যাকটিভ (সক্রিয়)
৪) সেমি অ্যাকটিভ (আধা সক্রিয়)
৫) প্যাসিভ (নিস্ক্রিয় বা অসাড়)

সিংহভাগ গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র গুলোকে মূলত দুই ধরনের পরিচালন ব্যবস্থার দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। সবচেয়ে অত্যাধুনিক গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রের পরিচালন ব্যবস্থা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্বারা ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যেই সংরক্ষণ করা থাকে। এর ফলে উৎক্ষেপণের পরে এইসব ক্ষেপণাস্ত্রগুলিকে আর ম্যানুয়ালি নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজন হয় না। আর দ্বিতীয় পরিচালন ব্যবস্থায় ক্ষেপণাস্ত্রটির উৎক্ষেপণ কেন্দ্র অথবা উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে কিছুটা দূরে অন্য কোন দপ্তরে কৃত্রিম উপগ্রহের সাহায্যে ম্যানুয়ালি নিয়ন্ত্রণ করা হয় ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিবিদ আর বিজ্ঞানীদের দ্বারা।

কম্যান্ড গাইডেন্স প্রক্রিয়ার অন্তর্ভুক্ত প্রযুক্তিবিদরা উৎক্ষেপণ কেন্দ্র অর্থাৎ লঞ্চ সাইট থেকে ক্ষেপণাস্ত্রের গতিপথ পর্যবেক্ষণ করতে শুরু করে। এরপর তাঁরা রেডিও, রাডার আর লেসার ইমপালস অর্থাৎ লেসার রশ্মির স্পন্দন দ্বারা ক্ষেপণাস্ত্রটিকে নির্দেশিকা জারি করে যথাযথ ভাবে পরিচালনা করে। আধুনিক যুগে যে কোন সামরিক বাহিনীর রাডার বিভাগের কর্মীরা তাঁদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির রাডারের সাহায্যে শত্রু শিবিরের মূল লক্ষ্যবস্তুকে নির্ভুলভাবে চিহ্নিত আর শনাক্তকরণ করে লক্ষ্যবস্তুর সঠিক অবস্থান আর গতিপথ সম্বন্ধে যাবতীয় তথ্যবলী ক্ষেপণাস্ত্রের কম্যান্ড বিভাগকে প্রেরন করে। অপরদিকে সামরিক বাহিনীর কন্ট্রোল বিভাগ ক্ষেপণাস্ত্রের অপটিমাল ট্রাজেক্টরি অর্থাৎ সঠিক গতিপথ নির্ণয় করে সাঙ্কেতিক মাধ্যামে সেই গতিপথের নির্দেশ প্রেরন করে ক্ষেপণাস্ত্রটিকে।

বিভিন্ন প্রকারের গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র
=========================
গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র মূলত ৪ ধরনের হয়। সেগুলি হলো যথাক্রমে:

১) সেমি অ্যাকটিভ হোমিং সিস্টেম
=========================
যুদ্ধবিমান থেকে নিক্ষিপ্ত সেমি অ্যাকটিভ হোমিং সিস্টেম দ্বারা পরিচালিত গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রগুলির মূল অঙ্গের মধ্যেই একটি প্যাসিভ অর্থাৎ অক্রিয় রাডার রিসিভার সংযুক্ত করা থাকে। বর্তমান যুগের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান গুলিতে সংযুক্ত শক্তিশালী হাল্কা ওজনের রাডার শত্রুপক্ষের লক্ষ্যবস্তুকে উদ্দীপ্ত (illuminate) করে তোলে। এরপর সেই যুদ্ধবিমানের হার্ড পয়েন্ট লঞ্চার থেকে নিক্ষিপ্ত গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রের সেমি অ্যাকটিভ হোমিং সিস্টেমের অন্তর্ভুক্ত অক্রিয় রাডারটি অতি সহজেই সেই উদ্দীপ্ত লক্ষ্যবস্তুকে চিহ্নিত করে (অর্থাৎ target lock করে) সেটির উপর নির্ভুল নিশানায় আছড়ে পড়ে লক্ষ্যবস্তুকে ধ্বংস করে দেয়। কিন্তু এই ক্ষেত্রে শত্রুপক্ষের লক্ষ্যবস্তুর দিকে নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্রটির সঠিক গতিপথ বজায় রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট যুদ্ধবিমানটির অন্তর্ভুক্ত রাডারকে ক্ষেপণাস্ত্রের সংঘর্ষের আগে পর্যন্ত সদা সর্বদা শত্রু শিবিরের লক্ষ্যবস্তুকে চিহ্নিত কুরে যেতে হয়। একবার যদি যুদ্ধবিমানের রাডার থেকে শত্রুপক্ষের লক্ষ্যবস্তু মুছে যায় তাহলে নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্র তার লক হারিয়ে নিশানা চ্যুত হয়ে ভুল জায়গায় গিয়ে আছড়ে পড়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। এই কারনে সংশ্লিষ্ট যুদ্ধবিমানের পাইলটকে ক্ষেপণাস্ত্রের গতির সাথে সাযুজ্য রেখে লক্ষ্যবস্তুকে নিজের বিমানের রাডারে ধরে রাখার জন্য ক্রমাগত দ্রুতবেগে বিমান চালিয়ে যেতে হবে। বাস্তবের আকাশ যুদ্ধে অনেকসময় শত্রুপক্ষের লক্ষ্যবস্তুকে নিজের বিমানের রাডারে ধরে রাখতে গিয়ে যুদ্ধবিমানের পাইলটরা বিপদজনক ভাবে বিমান পরিচালনা করে তাঁর বিমান সমেত শত্রুদের ডেরায় প্রবেশ করে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র বা কামানের গোলা বা অ্যান্টি এয়ারক্রাফট গানের গুলি খেয়ে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে শহীদ হয়েছে। অনেক পাইলট আবার ইজেক্ট করে নিজেদের জীবন রক্ষা করতে অফল হলেও পরে শত্রুসেনাদের হাতে বন্দি হয়েছে। Jarhead: Law of Return সিনেমায় প্যালেস্টাইনের জিহাদি শিবিরের লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করার জন্য এইরকম কসরত করতে গিয়ে ইজরায়েলের বিমান বাহিনীর পাইলট ধরা পড়ে বন্দি হয় ইসলামিক জিহাদি গোষ্ঠীর হাতে।

২) অ্যাক্টিভ গাইডিং সিস্টেম
====================
বিপদের ঝুঁকির কারনে যে কোন রাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর পাইলটরা তাঁদের যুদ্ধবিমানে সেমি অ্যাকটিভ হোমিং সিস্টেম দ্বারা পরিচালিত ক্ষেপণাস্ত্রের চেয়ে অ্যাক্টিভ গাইডিং সিস্টেম দ্বারা পরিচালিত ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করতেই বেশি পছন্দ করে। অ্যাক্টিভ গাইডিং সিস্টেম দ্বারা পরিচালিত ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের পর তার মূল অঙ্গের মধ্যে সংযুক্ত একটি অত্যাধুনিক রাডার ট্রান্স রিসিভারের সাহায্যে নিজে নিজেই শত্রুশিবিরের লক্ষ্যবস্তুকে শনাক্ত করে সেই দিকে ধাবিত হয়ে মুহূর্তের মধ্যে নির্ভুল নিশানায় গুঁড়িয়ে দেয় লক্ষ্যবস্তুকে। যেহেতু লক্ষ্যবস্তুর শনাক্তকরণের জন্য এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র পূর্বের সেমি অ্যাকটিভ হোমিং সিস্টেম দ্বারা পরিচালিত ক্ষেপণাস্ত্র গুলির মতো তার উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে প্রেরিত সিগন্যালের উপর নির্ভরশীল নয় সেহেতু এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপণ স্থল বা উৎক্ষেপণকারী যুদ্ধবিমান গুলিকে সঠিকভাবে শনাক্ত করাও প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে শত্রুদের পক্ষে। এছাড়া এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রটির সঠিক গতিপথ বজায় রাখার জন্য যুদ্ধবিমানের পাইলটকেও অযথা প্রানের ঝুঁকি নিতে হয় না।

এছাড়া অ্যাক্টিভ গাইডিং সিস্টেম দ্বারা পরিচালিত ক্ষেপণাস্ত্রের অঙ্গের সাথে সংযুক্ত প্যাসিভ গাইডেন্স সিস্টেম পূর্বের সেমি অ্যাকটিভ হোমিং সিস্টেম দ্বারা পরিচালিত ক্ষেপণাস্ত্রগুলির মতো নিজের অঙ্গ থেকে কোনরকম এনার্জিও নির্গত করে না আর অন্য কোন বহিরাগত দূরবর্তী কম্যান্ড দপ্তর থেকেও নির্দেশ গ্রহণ করে না। এর পরিবর্তে এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র গুলি শত্রুশিবিরের লক্ষ্যবস্তু থেকে নির্গত গ্যাস বা রশ্মিবিচ্ছুরণ (radiation) এর সাহায্যে স্বয়ংক্রিয় ভাবে লক্ষ্যবস্তুকে শনাক্ত করে নির্ভুল নিশায় আছড়ে পড়ে ধ্বংস করে দেয়। অ্যাক্টিভ গাইডিং সিস্টেম দ্বারা পরিচালিত গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রের ইতিহাসে প্রাথমিক পর্বে নির্মিত পুরাতন আমলের ক্ষেপণাস্ত্রগুলি মূলত লক্ষ্যবস্তু থেকে নির্গত তাপের (heat seeking) সাহায্যে তাদের শনাক্ত করতো। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে প্রযুক্তির অভূতপূর্ব উন্নয়নের কারনে হাল আমলের অ্যাক্টিভ গাইডিং ক্ষেপণাস্ত্রগুলি তাপ ছাড়াও লক্ষ্যবস্তু থেকে নির্গত অতি বেগুনি রশ্মির বিচ্ছুরণ (Ultraviolet radiation) সহ অনান্য গ্যাস আর রশ্মির সাহায্যেও লক্ষ্যবস্তুকে শনাক্ত করে।

৩) ইনার্শিয়াল সিস্টেম
================
ইনার্শিয়াল সিস্টেম দ্বারা পরিচালিত গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রগুলির গতিপথ পূর্ব নির্ধারিত ভাবে প্রোগ্রামিং করা থাকে। কম্যান্ড বিভাগের কর্মীরা বিভিন্ন কৃত্রিম সামরিক উপগ্রহ দ্বারা পরিচালিত জাইরোস্কোপিক প্ল্যাটফর্ম আর ন্যাভিগেশন সিস্টেমগুলির সাহায্যে নিরন্তরভাবে মহাকাশে উড্ডীন ক্ষেপণাস্ত্রগুলির উপর নজরদারি চালিয়ে সেগুলির গতিপথ সঠিক দিশায় পরিচালিত করতে থাকে। কৃত্রিম উপগ্রহের সাহায্যে ক্ষেপণাস্ত্রগুলির সঠিক অবস্থান সম্বন্ধে যথাযথ তথ্য সংগ্রহ করার পর কম্যান্ড বিভাগের কর্মীরা তাঁদের অত্যাধুনিক কম্পিউটারের সাহায্যে ক্ষেপণাস্ত্রগুলির সঠিক গতিবেগ আর সঠিক দিক চিহ্নিত করে সেই মুহূর্তে ক্ষেপণাস্ত্রটি তার লক্ষ্যবস্তু থেকে ঠিক কতটা দূরত্বে আছে সেটা সঠিকভাবে নির্ণয় করে একটি বিশেষ সফটওয়্যারের সাহায্যে কৃত্রিম উপগ্রহ দ্বারা রিমোট সিগন্যাল প্রেরন করে উড়ন্ত ক্ষেপণাস্ত্রটিকে তার লক্ষ্যবস্তুর সর্বশেষ সঠিক অবস্থান আর সাম্ভাব্য গতিপথ সম্বন্ধে নিত্য নতুন নির্দেশ প্রেরন করতে থাকে। এর ফলে ক্ষেপণাস্ত্র আর ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপণ স্থলের লঞ্চ প্ল্যাটফর্ম থেকে কোন প্রকার বৈদ্যুতিন নিষ্ক্রমণ হয় না। এই কারনে সংশ্লিষ্ট ক্ষেপণাস্ত্রটির শনাক্তকরণ বেশ কঠিন হয়ে পড়ে শত্রুপক্ষের কাছে।

কিভাবে লক্ষ্যবস্তুকে সন্ধান করে ধ্বংস করে গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র
=============================================
গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রগুলি মূলত প্রান্তিক পরিচালন ব্যবস্থার (Terminal Guidance System) সাহায্যে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুর সঠিক অবস্থান সম্বন্ধে অবগত হয়। সংঘর্ষের স্থান হয় পূর্ব নির্ধারিত ভাবে প্রোগ্রামিং করা থাকে অথবা ডিজিটাল সিন ম্যাচিং এরিয়া কো-রিলেটার সিস্টেমের সাহায্যে লক্ষ্যবস্তুর সঠিক অবস্থান সম্বন্ধে অনুসন্ধান করে সংঘর্ষের স্থান আর সময় নির্ধারণ করা হয়। অনেক গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র থার্মাল ইমেজিং আর ইলুমিনেশন সেন্সর দ্বারা সজ্জিত থাকে। থার্মাল ইমেজিং সেন্সরের সাহায্যে লক্ষ্যবস্তুর অঙ্গ থেকে নির্গত তাপ প্রবাহের দ্বারা আর ইলুমিনেশন সেন্সরের সাহায্যে লক্ষ্যবস্তুর অঙ্গ থেকে নির্গত আলোক রশ্মির বিচ্ছুরণের সাহায্যে লক্ষ্যবস্তুকে শনাক্ত করতে সফল হয় এইসব গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র।

একবার লক্ষ্যবস্তুকে শনাক্ত করে শিয়রে সমনের ন্যায় গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুর সন্নিকটে উপস্থিত হয়ে মূল অভিঘাত স্থলে আছড়ে পড়ে একাধিক উপায়ে বিস্ফোরণ আর সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। মূলত গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রগুলি যেসব প্রকার বিবিধ উপায়ে লক্ষ্যবস্তুর সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় সেগুলি হলো যথাক্রমে

১) ইমপ্যাক্ট অর্থাৎ সরাসরি সংঘাত
=========================
এই পদ্ধতিতে ক্ষেপণাস্ত্রটি সরাসরি এসে আছড়ে পড়ে লক্ষ্যবস্তুর উপর। এর ফলে ক্ষেপণাস্ত্রের ওয়ারহেড কায়িকভাবে লক্ষ্যবস্তুর সাথে সংস্পর্শে আসে। এই সংস্পর্শের ফলে ওয়ারহেডে অবস্থিত বোমাগুলি প্রবল বিস্ফোরণ করে লক্ষ্যবস্তুকে ধ্বংস করে। আল জুয়াহরির ক্ষেত্রে সংস্পর্শের সাথে সাথে হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্রের ওয়ারহেডে সংরক্ষিত ধারালো শলাকাগুলি উন্মুক্ত হয়ে তিরবেগে ধেয়ে এসে চারদিকে থেকে আমূল বিদ্ধ করে আল কায়দার জিহাদি নেতাকে। এর ফলে নিঃশব্দে মুহূর্তের মধ্যে টুকরো টুকরো হয়ে যায় জুয়াহরির শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ। ঠিক যেমনভাবে শ্রীকৃষ্ণের তীক্ষ্ণধার সুদর্শন চক্র নিমেশের মধ্যে টুকরো টুকরো করে দিয়েছিল মগধ নরেশ শিশুপালের দেহ আর বিষ্ণুর সুদর্শন চক্র টুকরো টুকরো করে দিয়েছিল সতীর দেহ। এক্ষেত্রে সুদর্শন চক্র আসলে হয়তো মানবজাতির পূর্বপুরুষ ভিনগ্রহীদের দ্বারা ব্যবহৃত কোন অত্যাধুনিক ড্রোন ছিল আর সেই ড্রোন থেকে নির্গত ওয়ারহেডে বোমার পরিবর্তে ধারালো শলাকা সংরক্ষিত ছিল।

২) বিলম্বিত সংঘাত
==============
মাঝেমধ্যে লক্ষ্যবস্তুর সাথে সংস্পর্শের পর ক্ষেপণাস্ত্রের ওয়ারহেডের বিস্ফোরণের ডেটোনেটের সময় পূর্ব নির্ধারিত প্রোগ্রামিং এর দ্বারা ইচ্ছাকৃতভাবে কিছুটা বিলম্বে করা হয়ে থাকে। সাধারণত শত্রুপক্ষের ডেরায় উপস্থিত নিজ দলের কম্যান্ডো সেনাদের নিরাপদ দূরত্বে সরে আসার জন্য যথাযথ সময় প্রদানের জন্য এই ধরনের বিলম্বিত ডেটোনেট প্রোগ্রামিং করা হয়ে থাকে।

৩) লেসার রশ্মি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সংঘাত
==========================
এই পদ্ধতিতে একটি গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র মূল লক্ষ্যবস্তুর নিকটবর্তী স্থানে এসে উপস্থিত হবার পর তার অঙ্গে সজ্জিত রাডার, লক্ষ্যবস্তু থেকে নির্গত শব্দ তরঙ্গ, চৌম্বকীয় সেন্সর আর লেসার রশ্মির সাহায্যে ওয়ারহেডে সংরক্ষিত বিস্ফোরক বা শলাকার ডেটোনেটের সঠিক সময় নির্ধারণ করে।

সময়ের রথের চাকা যত সম্মুখপানে গড়াবে আমাদের মানবজাতির বিজ্ঞান আর প্রযুক্তিও ততধিক উন্নত হতে থাকবে। ভবিষ্যৎকালে সমর বিজ্ঞানীরা হয়তো এমন অত্যাধুনিক গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণ করতে সফল হবেন যা কোন প্রকার মানব দ্বারা পরিচালিত কম্যান্ড সেন্টারের সাহায্য ছাড়াই সম্পূর্ণভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে আরও অত্যাধুনিক কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে ফুটেজ সংগ্রহ করে নিজে নিজেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে একাধিক লক্ষ্যবস্তুকে খুঁজে বের করবে। এরপর মাত্র একটি গাইডে ক্ষেপণাস্ত্র তার ওয়ারহেডে অবস্থিত একাধিক ওয়ারহেড থেকে একাধিক বোমা আর শলাকা নির্গত আর ডেটোনেট করে একসাথে বিভিন্ন স্থানে উপস্থিত একাধিক লক্ষ্যবস্তুকে মুহূর্তের মধ্যে সফলভাবে নিকেশ করবে, ঠিক যেমন মহাভারতে অর্জুনের ধনুক থেকে নিক্ষিপ্ত মাত্র একটি তির শূন্যে উৎক্ষেপিত হয়ে একাধিক তিরের সৃষ্টি করে একসাথে একাধিক শত্রুদের নিধন করতো। সমর বিজ্ঞানের পরিভাষায় এই ধরনের গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রকে। বাস্তবে দূরপাল্লার গণবিধ্বংসী ICBM ক্ষেপণাস্ত্রগুলি ইতিমধ্যেই এই ধরনের প্রযুক্তি আহরণ করতে কিছুটা সফলও হয়েছে। সমর বিজ্ঞানের পরিভাষায় এই ধরনের ICBm কে Multiple independently targetable reentry vehicle বা সংক্ষেপে (MIRV) নামে অভিহিত করা হয়। কিন্তু টোমাহক বা ব্রাহ্মসের মতো গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রের নিকটে এই ধরনের অর্জুন জাতীয় প্রযুক্তি এখনও অধরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Post

সেকালের হাওড়া জেলার কবিয়ালসেকালের হাওড়া জেলার কবিয়াল

রানা চক্রবর্তীঃ হাওড়া জেলার প্রাচীনতম জনপদটির নাম হল শালিখা, যেটি বর্তমানে সালকিয়া নাম পরিচিত। অতীতে সেই প্রাচীন জনপদে এমন কিছু প্রতিভাবান মানুষ বাস করতেন, যাঁদের প্রতিভার আলোকে সারা বাংলা আলোকিত

ধর্মঠাকুর কে?ধর্মঠাকুর কে?

রানা চক্রবর্তীঃ পশ্চিমবঙ্গে ধর্মদেবতার পূজা এখন একান্তভাবে বর্ধমান বিভাগে সীমাবদ্ধ। তবে চব্বিশ পরগণা জেলায় ও কলকাতার কাছাকাছি অঞ্চলে, ধর্মদেবতার বিগ্রহ ও নিত্যপূজা এখনও একেবারে লুপ্ত হয়ে যায় নি। পূর্ববঙ্গের স্থানে

মধ্যযুগের বরণীয় বৈষ্ণব সাহিত্যমধ্যযুগের বরণীয় বৈষ্ণব সাহিত্য

রানা চক্রবর্তীঃ শ্রীচৈতন্যের আবির্ভাবের প্রায় অর্দ্ধ শতাব্দী আগে ‘মালাধর বসু’ যখন তাঁর ‘শ্রীকৃষ্ণবিজয়’ কাব্য রচনা করেছিলেন, তখন ‘কবীরের দোহা’ উত্তরাপথের অসংখ্য নরনারীর মনে এক নতুন ব্যঞ্জনার সৃষ্টি করেছিল। মুসলমান পিতামাতার

চীন, ভারতবর্ষ রাশিয়ার সাথে নিজেদের মুদ্রাতে ব্যবসা করছে, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নাকী পূর্ব বনাম পশ্চিম! কোন পথে বিশ্ব রাজনীতি?চীন, ভারতবর্ষ রাশিয়ার সাথে নিজেদের মুদ্রাতে ব্যবসা করছে, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নাকী পূর্ব বনাম পশ্চিম! কোন পথে বিশ্ব রাজনীতি?

১৫৫৫ সালে অর্থাৎ প্রায় চারশো বছর আগে ফ্রান্সের বিখ্যাত জ্যোতিষী নস্ত্রাদ্রামুস এমন কিছু ভবিষ্যত বানী করেছিলেন যা আজও মানুষকে অবাক করে দেয়। ওনার প্রায় অধিকাংশ ভবিষ্যত বানীই সত্য হয়েছিল যার