নিয়োগ দুর্নীতিতে ইডি’র হাতে গ্রেফতার কুন্তল ঘনিষ্ঠ হুগলির যুব নেতা শান্তনু বন্দোপাধ্যায়। তিনি আবার হুগলি জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য ও পূর্ত কর্মাধক্ষ। শুক্রবার একটানা প্রায় সাতঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। পাশাপাশি, তাঁর বলাগড়ের বাড়িতে একটানা ২০ ঘণ্টা তল্লাশিও চালানো হয়।
আরো পড়ুন- ইউক্রেনে পরপর মিশাইল হানা, মৃত্যু ৬
তাপস মণ্ডল গ্রেপ্তারির পর থেকেই সামনে আসে শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। হুগলির যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের সঙ্গে শান্তনুর ঘনিষ্ঠতা ছিল। তিনি হুগলি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ। বলাগড়ে একই এলাকার বাসিন্দা দু’জনে। ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার হন কুন্তল ঘোষ। তারপর ইডি’র স্ক্যানারে চলে আসেন শান্তনু। অভিযোগ, তিনি চাকরির দর ঠিক করতেন। কার্যত চাকরি নিলামে তুলতেন তিনি। সূত্রের খবর, কার কাছ থেকে কতটাকা নেওয়া হবে চাকরির বিনিময়ে সেটা ঠিক করতেন শান্তনু। অভিযোগ এমনটাই। এমনকী তার ঘনিষ্ঠ কোনো যুব তৃণমূল নেতার কাছ থেকে পর্যাপ্ত টাকা না নিয়েই চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে সেই দাবিও দলের অন্দরে যিনি তুলতেন, তার নাম শান্তনু বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তবে অন্যদিকে কোন প্রার্থীর কাছ থেকে কত লাখ টাকা নেওয়া হবে সেটাও ঠিক করতেন তিনি। কুন্তলের অত্যন্ত ভরসার জায়গায় ছিলেন তিনি। অভিযোগ এমনটাই।
সেই তথ্য আদৌ সত্যি কিনা, তা খতিয়ে দেখতে গত ২০ জানুয়ারি শান্তনুর বাড়িতে হানা দেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। চলে তল্লাশি। সেই সময় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি বাজেয়াপ্ত করে ইডি। এরপর মোট সাতবার তাঁকে তলব করেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তদন্তকারীরা। সেই মতো হাজিরা দেন শান্তনু। শুক্রবার সপ্তমবার সিজিও কমপ্লেক্সে যান তিনি। বেলা ১১টা ৪৪ মিনিট নাগাদ পৌঁছন। সূত্রের খবর, বেলা ১২টা থেকে শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। টানা প্রায় সাতঘণ্টা জেরা করা হয় তাঁকে। বয়ানে অসংগতির অভিযোগে শেষমেশ শুক্রবার সন্ধেয় তাঁকে গ্রেপ্তার করে ইডি।

শান্তনু বন্দোপাধ্যায়
এদিকে বিরোধীদের একাংশের দাবি, চন্দননগর সহ হুগলির একাধিক জায়গায় শান্তনুর একাধিক বিলাসবহুল সম্পত্তি রয়েছে। রেস্তরাঁ ব্যবসার সঙ্গেও তিনি যুক্ত। চাকরি চুরির টাকায় ফুলে ফেঁপে উঠেছিলেন শান্তনু। আর সবটাই যুব তৃণমূলের শীর্ষ পদে থাকার সুবাদে তিনি করতেন। এমনটাই অভিযোগ বিরোধীদের।
বিজেপি রাজ্য কমিটির সদস্য তথা হুগলির বিজেপ নেতা সোমনাথ দাস জানান, কয়েক বছরের মধ্য়ে শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের কীভাবে এত প্রতিপত্তি হল তা দেখা হোক। কীভাবে এত সম্পত্তি করল তা খতিয়ে দেখা হোক।