আলাস্কান উড ফ্রগ, এক আশ্চর্য ক্ষমতার অধিকারী এই ব্যাঙ - Ei Bangla
Ei Bangla ব্লগ আলাস্কান উড ফ্রগ, এক আশ্চর্য ক্ষমতার অধিকারী এই ব্যাঙ

আলাস্কান উড ফ্রগ, এক আশ্চর্য ক্ষমতার অধিকারী এই ব্যাঙ


আলাস্কান উড ফ্রগ। এক আশ্চর্য ক্ষমতার অধিকারী ” সাত মাস ‘নিষ্প্রাণ’ দেহ, বরফে জমাট বেঁধেও দিব্যি জীবত থাকে এই ব্যাঙের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে অদ্ভুত এক ক্ষমতা। বা বলা ভালো, চরম প্রকৃতির সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতেই বিবর্তনের এই আশ্চর্য পথে হেঁটেছে এই প্রাণীটি।

আর্কটিক সার্কেল মধ্যে অবস্থিত হওয়ায়, চিরকালই শীতের দাপট থাকা আলাস্কায়। বছরের বেশিরভাগ সময়েই সেখানকার তাপমাত্রা থাকে হিমাঙ্কের নিচে। স্তন্যপায়ী প্রাণীরা এই তাপমাত্রা সয়ে গেলেও, শীতলরক্তের প্রাণীদের ক্ষেত্রে এই পরিবেশে বেঁচে থাকা এক-কথায় অসম্ভব। তবে এই প্রতিকূলতার সঙ্গেও নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে আলাস্কান উড ফ্রগ।

আরো পড়ুন- ভারতের এই খনি থেকে মিলবে ১৭ হাজার কোটি টাকার সোনা! উত্তোলনের বড় পদক্ষেপ কেন্দ্রের

আলাস্কান উড ফ্রগ

সাধারণত এই ব্যাঙের দেহের দুই-তৃতীয়াংশই নির্মিত জল দিয়ে। শীতকালে তা সম্পূর্ণভাবে জমাট বেঁধে পরিণত হয় বরফে। জমাট বাঁধে রক্তও। বন্ধ হয়ে যায় হৃদপিণ্ড। তবে গোটা দেহ পাথরের মতো শক্ত হয়ে গেলেও প্রাণ যায় না এই প্রাণীটির। শীতের পর বসন্তের আগমনে যখন একটু একটু করে পারদ চড়ে আলাস্কায়, তখন ফের সজীব হয়ে ওঠে উড ফ্রগরা। ফের শুরু হয় রক্তপ্রবাহ। তবে একদিন দুদিন নয়, টানা মাস সাতেক এভাবেই জমাট বেঁধে থাকতে পারে এই ব্যাঙ। কাজেই শীতঘুম না বলে, এ-হেন ঘটনাকে ধ্যানমগ্নতা বলাই যায় অনায়াসে! কিন্তু কীভাবে সম্ভব হয় এমনটা?

আলাস্কান উড ফ্রগ

এই আশ্চর্য ক্ষমতার পিছনে দায়ী ব্যাঙের দেহে সঞ্চিত গ্লাইকোজেন। গ্রীষ্ম কিংবা বসন্তে দেহের সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গেই প্রচুর পরিমাণ গ্লাইকোজেন সংগ্রহ করে রাখে উডফ্রগ। ফলে রক্ত জমাট বাঁধলেও, কোষে কোষে খাদ্য সরবরাহের সমস্যা থাকে না কোনো। এই গ্লাইকোজেনকেই গ্লুকোজে পরিণত করে প্রতিটি অঙ্গে শক্তি সরবরাহ করে আলাস্কান উড ফ্রগ। শীতের শেষে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করলে আরও বেশি মাত্রায় তৈরি হয় গ্লুকোজ। শিথিল হয় শরীরের পেশি। কাজেই ফের চলচ্ছক্তি ফিরে পায় তারা। তবে মজার বিষয় হল, চরম প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা আয়ত্ত করলেও, অনেক সময় জমাট বাঁধা অবস্থাতেও খাদকদের শিকার হয়ে থাকে এই ব্যাঙ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Post

‘অষ্টাদশ শতাব্দীর বাংলার বেসরকারি ব্যবসা’‘অষ্টাদশ শতাব্দীর বাংলার বেসরকারি ব্যবসা’

রানা চক্রবর্তীঃ অষ্টাদশ শতাব্দীর বঙ্গদেশে ইউরোপীয় কেম্পানিগুলির ব্যবসা সরকারি ব্যবসা (Public trade); আর কোম্পানিগুলির কর্মচারী, লাইসেন্সধারী স্বাধীন বণিক (free merchant) ও লাইসেন্সহীন বেআইনি বণিকদের (interloper) ব্যবসা একত্রে বেসকারি ব্যবসা (private

‘ইলিয়াসশাহী’ বংশের পতন‘ইলিয়াসশাহী’ বংশের পতন

পিতা ‘সিকান্দার শাহের’ বাহিনীকে যুদ্ধে পরাজিত করবার পরে নিজের ষোলজন বৈমাত্রেয় ভাইয়ের চোখ উপড়ে নিয়ে ‘গিয়াসুদ্দীন আজম শাহ’ ইলিয়াসশাহী বংশের তখতে আরোহন করেছিলেন। ঐতিহাসিকদের মতে তিনিই ইলিয়াসশাহী বংশের শ্রেষ্ঠ সুলতান

‘পুরানো কলকাতার একটি মুদির দোকান’‘পুরানো কলকাতার একটি মুদির দোকান’

রানা চক্রবর্তীঃ ১৯৪০-এর দশকে কেউ যদি সর্বদেশীয় মেয়েদের নামের মিলন যদি দেখতে চাইতেন, তাহলে তাঁর পুরানো কলকাতার একটি ষ্টীমার ঘাটে গেলেই চলত। সেখানে তখন থরে থরে গঙ্গার বুকের উপরে বাড়ির

দ্য হিস্ট্রি অফ ইসরায়েলে জামাই বলে উল্লেখ! মোসাদের এক দুর্ধর্ষ মিশরীয় এজেন্ট এঞ্জেলদ্য হিস্ট্রি অফ ইসরায়েলে জামাই বলে উল্লেখ! মোসাদের এক দুর্ধর্ষ মিশরীয় এজেন্ট এঞ্জেল

সময়টা ১৯৭৩ এর ৫ অক্টোবর, রাত একটার সময় কায়রো থেকে ইসরায়েলে তেল আভিবে মোসাদের হেড অফিসে ফোন আসে একটি। ফোনের অপরপ্রান্তে থাকা ব্যাক্তিটি নিজেকে এঞ্জেল হিসাবে পরিচয় দেয়, যা ব্যাক্তিটির