সুশান্তের বিরুদ্ধে চাকরি চুরির অভিযোগ! পরিবারের ২০ জনের তালিকা ফাঁস - Ei Bangla
Ei Bangla পশ্চিমবঙ্গ সুশান্তের বিরুদ্ধে চাকরি চুরির অভিযোগ! পরিবারের ২০ জনের তালিকা ফাঁস

সুশান্তের বিরুদ্ধে চাকরি চুরির অভিযোগ! পরিবারের ২০ জনের তালিকা ফাঁস


সুজন চক্রবর্তীর পর এবার সুশান্ত ঘোষ। বাম আমলে ‘চিরকুটে’ চাকরি নিয়ে আরও একবার তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। অভিযোগ, নিজের পরিবার ও আত্মীয়দের অনেককেই স্রেফ ‘সুপারিশে’র জোরে চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন সুশান্ত ঘোষ। চাকরি প্রাপকদের একটি তালিকাও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তালিকায় সুশান্ত ঘোষের এমন ২০জন নিকট আত্মীয়ের নাম রয়েছে, যাঁরা বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে চাকরি করেন বা করতেন বলে দাবি করা হয়েছে।

এপ্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেন, এতদিন চুপ ছিলাম। কিন্তু সিপিএম নেতারা ইদানীং বড্ড লাফালাফি করছে। লাল পতাকার তলায় লুকিয়ে সিপিএম যে কত দুর্নীতি করেছে, তা বোধহয় দলের নেতারা ভুলে গিয়েছেন। আমি শিক্ষামন্ত্রীকে ঘটনার সঠিক তদন্তের জন্য আবেদন জানাব। কীভাবে চাকরি হয়েছে, তা জনগণের জানা প্রয়োজন।

সিপিএম নেতা সুশান্ত ঘোষ বাম জামানায় দীর্ঘদিনের মন্ত্রী ছিলেন। বিরোধীরা বলতেন, ঝড় হলেও সুশান্ত ঘোষের নির্দেশ ছাড়া গড়বেতায় গাছের পাতা নড়ে না! এতটাই ছিল তাঁর প্রভাব। সেই সুশান্ত ঘোষ বাম আমলে ক্ষমতা ও প্রভাব খাটিয়ে নিকটাত্মীয়দের চাকরি পাইয়ে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করছে তৃণমূল।

ভাইরাল হওয়া ওই তালিকায় দাবি করা হয়েছে, বাম জমানায় স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি পেয়েছিলেন সুশান্ত ঘোষের স্ত্রী। সুশান্তবাবুর বোনেদের মধ্যে অনেকেই সরকারি চাকরি করতেন। কেউ স্কুলে শিক্ষকতা করেন, কেউ আইসিডিএস-এ সুপারভাইজার। শুধু তাই নয়, প্রভাব খাটিয়ে বোনেদের স্বামীদেরও চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, এক বোনের স্বামী মেদিনীপুর প্রাইমারি বোর্ডে চাকরি করেন। আর এক বোনের স্বামী প্রাইমারি স্কুলে এবং এক ভগ্নিপতি সেচদপ্তরে চাকরি করেন।

এছাড়াও সুশান্ত ঘোষের মামার বাড়ির পরিবারে একাধিকজন সরকারি চাকরি করেন। এক ভাগ্নে হাইস্কুলের লাইব্রেরিয়ান, আর এক ভাগ্নে সেচদপ্তরে চাকরি করেন। সুশান্তবাবুর পিসতুতো ভাই, মাসতুতো ভাইয়েদেরও কেউ পরিবহণ দপ্তরে, কেউ স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি করেন।

এখানেই শেষ নয়, সুশান্ত ঘোষের শ্যালক, শ্যালিকাদের প্রায় প্রত্যেকেই সরকারি চাকরির সঙ্গে যুক্ত। এমনকী শ্যালিকার স্বামীর ভাইয়েরা পর্যন্ত সরকারি চাকরি করেন। সুশান্তবাবুর বড় শ্যালক অরবিন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় আবার জেলা কমিটির সদস্য ছিলেন। ওই তালিকায় দাবি করা হয়েছে, তত্কালীন জেলা সম্পাদক দীপক সরকারের (তিনিও শিক্ষকতা করতেন) অপত্য স্নেহে এইসব কাজের পাশাপাশি ২০০৮, ২০০৯ এবং ২০১০ সালে প্রাইমারিতে লক্ষ লক্ষ টাকায় চাকরি বিক্রি করেছেন সুশান্তবাবু। তালিকার তথ্যকে সমর্থন জানিয়ে তৃণমূলের গড়বেতার ব্লক সভাপতি সেবাব্রত ঘোষ বলেন, গড়বেতা একটি দুধের শিশুও এইসব ইতিহাস জানে। মন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর সুপারিশে কেউ ফায়ার ব্রিগেড, কেউ এসবিএসটিসি, কেউ আবার কলেজে চাকরি পেয়েছেন। এপ্রসঙ্গে সুশান্ত ঘোষকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। মেসেজ করা হলেও তিনি কোনও উত্তর দেননি।

সিপিএমের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক তরুণ রায় বলেন, যাঁরা চাকরি করছেন, তাঁরা নিশ্চয়ই বৈধভাবেই চাকরি পেয়েছেন। আসলে তৃণমূল যেভাবে নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে, তা থেকে বাঁচতেই সিপিএমকে টার্গেট করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Post

রাতের অন্ধকারে পঞ্চায়েতের ফাইল লোপাটের চেষ্টা! রণক্ষেত্র মালদার হরিশ্চন্দ্রপুররাতের অন্ধকারে পঞ্চায়েতের ফাইল লোপাটের চেষ্টা! রণক্ষেত্র মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর

মালদাঃ– রাতের অন্ধকারে পঞ্চায়েত অফিস থেকে ফাইল লোপাট করার অভিযোগে কার্যত রণক্ষেত্র হয়ে উঠল হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকা। সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ল তৃণমূল এবং সিপিএম সমর্থকেরা। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাত সাড়ে নয়টা

ব্যারাকপুরে প্রার্থী হচ্ছেন অর্জুন! অফিস থেকে সরনো হল মমতা অভিষেকের ছবিব্যারাকপুরে প্রার্থী হচ্ছেন অর্জুন! অফিস থেকে সরনো হল মমতা অভিষেকের ছবি

এইবাংলা ডেক্সঃ তৃণমূল এবার তাকে টিকিট দেয়নি, অর্জুনের কথায় জনগর্জন সভায় ডেকে তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে দল। তাই এবার তৃণমূলকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন অর্জুন। এদিন সকালে সাংবাদিক বৈঠক করে

দিদির দূত কর্মসূচিতে গিয়ে কর্মীদের হাতে ঘেরাও সভানেত্রী, অবরোধদিদির দূত কর্মসূচিতে গিয়ে কর্মীদের হাতে ঘেরাও সভানেত্রী, অবরোধ

মালদাঃ বেহাল রাস্তার প্রতিবাদ জানিয়ে তৃণমূলের ইংরেজবাজার ব্লক সভানেত্রী প্রতিভা সিংহকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন দলেরই একাংশ নেতাকর্মীরা। এমনকি এই বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে ইংরেজবাজার ব্লকের

রাজ্যপালের ভাষণজুড়ে শুধুই মমতা, ‘আমার মুখ্যমন্ত্রী’!রাজ্যপালের ভাষণজুড়ে শুধুই মমতা, ‘আমার মুখ্যমন্ত্রী’!

জগদীপ ধনকড় জমানার বিপরীত ছবি। সিভি আনন্দ বোস (CV Anand Bose) রাজ্যপাল হয়ে আসার পর থেকে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজভবনের দূরত্ব ঘুচেছে। বুধবার বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বিধানসভার বাজেট