জানতেন না বাংলা, জিতেন্দ্র থেকে জিৎ কিভাবে বাংলা সিনেমার সুপারস্টার হলেন? রইল সেই গল্প - Ei Bangla
Ei Bangla বিনোদন জানতেন না বাংলা, জিতেন্দ্র থেকে জিৎ কিভাবে বাংলা সিনেমার সুপারস্টার হলেন? রইল সেই গল্প

জানতেন না বাংলা, জিতেন্দ্র থেকে জিৎ কিভাবে বাংলা সিনেমার সুপারস্টার হলেন? রইল সেই গল্প


সালটা তখন ২০০১। টলিউডের (Tollywood) পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তী তখন তার পরবর্তী সিনেমার জন্য নায়কের সন্ধানে ছিলেন। প্রথমে অবশ্য তৎকালীন টলিউড সুপারস্টার প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের কাছেই এই অফারটি গিয়েছিল। তবে এক কলেজ ছাত্রের ভূমিকায় অভিনয় করার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন প্রসেনজিৎ। প্রসেনজিতের এই প্রত্যাখ্যানই কার্যত টলিউডে এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করলো। বাংলা পেল চলচ্চিত্র জগতের এক আনকোরা নতুন মুখ, যে মুখ আগামী কয়েক দশক ইন্ডাস্ট্রিতে রাজত্ব করতে চলেছে!

১৯ বছর আগের সেই নতুন মুখের উপর বাজি রেখে হরনাথ চক্রবর্তী যে ছবিটি রিলিজ করেছিলেন, সেই ছবিটিই সেই বছর বক্স অফিসের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দেয়। সুরকার এসপি ভেঙ্কটেশের সুরে ছবির টাইটেল সংটি তখন বাংলার প্রতিটি মানুষের মুখে মুখে ফিরছে। ‘ও বন্ধু তুমি শুনতে কি পাও’, গানের প্রতিটি কথায় এবং সুরে প্রেমিক হৃদয়ের আকুতি গিয়ে পৌঁছেছে তার বিশেষ বন্ধুর কাছে! ঠিকই ধরেছেন, সেই ছবিটিই ছিল টলিউডের ব্লকবাস্টার ছবি ‘সাথী’ (Sathi)। ছবির নায়ক, জিৎ (Jeet)।

ডেবিউ ছবিতেই হিট, এমন তারকা’র সংখ্যা টলিউডে খুব বেশি নয়। জিৎ সেই সংখ্যালঘুদের মধ্যে এক অন্যতম উজ্জ্বল তারকা। তবে ডেবিউ ছবি হিট হওয়া মানেই যে জিতের কেরিয়ার একেবারে মসৃণ ছিল, তা কিন্তু নয়। দক্ষিণ কলকাতার এক অচেনা অজানা গলির সিন্ধি পরিবারের ছেলেটি চেয়েছিল বলিউড সুপারস্টার হতে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বিখ্যাত অভিনেতাদের নকল করতেন তিনি। বলা যেতে পারে, সেটাই ছিল অভিনয়ে তার হাতেখড়ি।

তারকা হওয়ার স্বপ্ন তাকে এনেছিল মডেলিংয়ের দুনিয়ায়। নবাব কোম্পানির গেঞ্জির বিজ্ঞাপনের কাজের সুযোগও পেয়ে যান জিতেন্দ্র মাদনানি (Jitendra Madnani)। তখন কে ভেবেছিল, এই ছেলেটিই একদিন টলিউডের সুপারস্টার জিৎ হিসেবে পরিচিতি পাবে?

অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ থেকে মডেলিং এবং অভিনয় শেখার জন্য ক্লাস করতে শুরু করেন তিনি। সেই ক্লাসের সূত্রেই এক সিরিয়াল নির্মাতার নজরে পড়েন জিতেন্দ্র। ১৯৯৪ ‘বিষবৃক্ষ’ এবং ‘জন্মভূমি’ নামের দু-দুটি সিরিয়ালে অভিনয় করার সুযোগ পান জিতেন্দ্র। আরও বেশকিছু সিরিয়ালের অফার ছিল তার জন্য। তবে তার ইচ্ছে ছিল আরও বড় কিছু করার।

দুচোখে বলিউডের সুপারস্টার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ১৯৯৫ সালে তিনি পাড়ি দিয়েছিলেন মুম্বাইয়ে। ২ বছরের চেষ্টার পর অবশেষে একটি হিন্দি মিউজিক অ্যালবামে কাজের সুযোগ পেলেন তিনি। অ্যালবামের নাম, ‘বেওয়াফা তেরা মাসুম চেহেরা’। এরপর বলিউডের বেশ কিছু ছবির জন্য অডিশন দিতে শুরু করেন তিনি। কিন্তু প্রতিবারই সুযোগ ফসকে যাচ্ছিল তার হাত থেকে। সুযোগ এলো দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্র জগৎ থেকে।

একটি তামিল ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান জিতেন্দ্র। সেই ছবির নাম ‘চান্দু’। তবে বক্সঅফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে ‘চান্দু’। হতাশ হয়ে জিতেন্দ্র ফিরে আসেন কলকাতায়। সেখানেই তার জীবনের দ্বিতীয় এবং সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস শুরু হওয়া বাকি ছিল! পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তীর ‘সাথী’ ছবির নায়ক হয়ে জিতেন্দ্র থেকে তিনি হয়ে ওঠেন জিৎ। বাকিটা ইতিহাস।

দীর্ঘ প্রায় দুই দশক ধরে টলিউডের এক নম্বর অভিনেতা হয়ে রয়েছেন জিৎ। তার পরেও অবশ্য বহু নায়ক পেয়েছে টলিউড। তবে জিতের জনপ্রিয়তায় এতোটুকু ঘাটতি পড়েনি। অবাঙালি হয়েও বাংলা ইন্ডাস্ট্রির একচ্ছত্র বস জিৎ। বলিউডে ব্যর্থ হয়েও ভেঙে পড়েননি জিৎ। টলিউডে ফিরে এসে তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন, এভাবেও ফিরে আসা যায়। এভাবেও নতুন করে শুরু করা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Post

অতিমারির মন্দার বাজারে পেশাবদলের কথা ভেবেছিলেন, শিখেছিলেন রান্নাও : শাহরুখঅতিমারির মন্দার বাজারে পেশাবদলের কথা ভেবেছিলেন, শিখেছিলেন রান্নাও : শাহরুখ

‘পাঠান’ নিয়ে বিতর্ক চলছিল। বয়কটের আবহেও মুক্তির আগে তেমন ভাবে প্রচার চালাননি শাহরুখ খান। তবে ছবি মুক্তির পঞ্চম দিনে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিস্ফোরক তথ্য দিলেন নায়ক। অতিমারির মন্দার বাজারে তিনি নাকি

কাশ্মীরে ইতিহাস গড়ল ‘পাঠান’, শাহরুখের ছবিকে ঘিরে উন্মাদনাকাশ্মীরে ইতিহাস গড়ল ‘পাঠান’, শাহরুখের ছবিকে ঘিরে উন্মাদনা

কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী একটা নাম পাঠান। গোটা দেশে উন্মাদনা যাঁর ছবিকে ঘিরে তিনি শাহরুখ খান। করোনার অতিমারি পরবর্তী সময় বলিউডের সুদিন ফিরেছে তাঁর হাত ধরেই। প্রতিদিনই প্রায় একটার পর একটা

শ্রাবন্তীকে জড়িয়ে ধরে চুমু খাওয়ার চেষ্টা, কষিয়ে চড় মারলেন অভিনেত্রীশ্রাবন্তীকে জড়িয়ে ধরে চুমু খাওয়ার চেষ্টা, কষিয়ে চড় মারলেন অভিনেত্রী

টলিউডের অন্যতম ব্যস্ত নায়িকা শ্রাবন্তী। তিনি যা করেন, যা বলেন সবই ভাইরাল হয়। ক্যামেরার সামনে থেকে ক্যামেরার আড়াল, সবকিছু নিয়েই চর্চা হয়। ফোটোশ্যুট থেকে এক্সারসাইজ, ঘুরতে যাওয়ার ছবি– নিজের জীবনের

হলিউডের এক সিনেমাতে শুধু গাড়িই ভাঙা ৫০ কোটি ডলারেহলিউডের এক সিনেমাতে শুধু গাড়িই ভাঙা ৫০ কোটি ডলারে

অ্যাকশন আর বিলাসবহুল অত্যাধুনিক গাড়ির জন্য হলিউডের ’ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস’ সিরিজের সিনেমাগুলো পৃথিবীজুড়ে বেশ জনপ্রিয়। সিনেমায় দেখা যায়, বিভিন্ন সময় গাড়িগুলো দুমড়ে-মুচড়ে ফেলা হয়। আমেরিকার একটি সংবাদমাধ্যম বলছে, সিনেমাটিকে আকর্ষণীয়